ডিপ্লোমা চাকুরি প্রস্তুতি ৫ (বেসিক ইলেকট্রিক্যাল নলেজ)
বেসিক ইলেকট্রিক্যাল নলেজ
.....................................................................
১. ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল কোথায় প্রযোজ্য হয়?
উত্তরঃ যেখানে চৌম্বক ক্ষেত্র স্থির এবং পরিবাহী গতিতে থাকে, সেখানে ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল ব্যবহার করা হয়।
.
২. মিউচুয়াল ইন্ডাকট্যান্স কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারনে পাশাপাশি দুটি কয়েলে একটির কারেন্টের পরিবর্তনের ফলে অন্যটিতে ভোল্টেজ আবিষ্ট হয় উক্ত ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যকে মিউচুয়াল ইন্ডাকট্যান্স বলে।
৩. সেলফ ইন্ডাকট্যান্স কাকে বলে?
উত্তরঃ এটা কয়েলের এমন একটি ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য, যা কয়েলে প্রবাহিত কারেন্ট বা কয়েলের চারদিকের ফ্লাক্সের হ্রাস-বৃদ্ধিতে বাধা দান করে।
.
৪. হিসটেরেসিস কাকে বলে?
উত্তরঃ চৌম্বক গুণাবলীর কিছুটা অংশ চৌম্বক পদার্থ কর্তৃক নিজের মধ্যে রেখে দেয়ার প্রবনতাকেই হিসটেরেসিস বলে।
.
৫. চৌম্বকীকরণ চক্র কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি লোহাকে চুম্বকে পরিনত করা, আবার চুম্বকহীন করা এবং আবার চুম্বকে পরিনত করা, আবার চুম্বকহীন করা, এই প্রক্রিয়া অনবরত চলতেই থাকলে এই প্রক্রিয়াকেই চৌম্বকীকরণ চক্র (Cycle of Magnetisation) বলে।
.
৬. ম্যাগনেটাইজেশন বা B-H কার্ভ কি?
উত্তরঃ X- এক্সিস কে ম্যাগনেটাইজিং ফোরস (H) এবং Y-এক্সিস কে ফ্লাক্স ডেনসিটি (B) হিসেবে ধরে যে কার্ভ আকা হয় তাকে ম্যাগনেটাইজেশন বা B-H কার্ভ বলে।
.
৭. এডি কারেন্ট কি?
উত্তরঃ যখন একটি বৈদ্যুতিক চুম্বকের কয়েলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট পরিবর্তিত হতে থাকে, তখন চৌম্বকক্ষেত্রও পরিবর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স কয়েলের তারকে কর্তন করে, ফলে কয়েলে একটি ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। একই সময়ে এই ফ্লাক্স লৌহদণ্ডকেও কর্তন করে। ফলে এই লৌহ দণ্ডেও ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। এই ভোল্টেজের কারনে লৌহ দণ্ডে একটি কারেন্ট আবর্তিত হতে থাকে, এই আবর্তিত কারেন্টকেই এডি কারেন্ট বলে।
.
৮. এডি কারেন্ট লস কাকে বলে?
উত্তরঃ হিসটেরেসিস লস ছাড়াও চৌম্বক উপাদানের মজ্জায় আবর্তমান বা এডি কারেন্টের কারনে কিছু অপচয় হয়, একে এডি কারেন্ট লস বলে।
.
৯. DC সার্কিট রেজিষ্ট্যান্স এর সূত্রাবলী কি কি?
উত্তরঃ রেজিষ্ট্যান্স এর সূত্রাবলী নিন্মে দেয়া হলঃ
1) একটি পরিবাহীর রেজিষ্ট্যান্স উহার দদৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক, যদি প্রস্থচ্ছেদ স্থির থাকে । অর্থাৎ, R α L
2) একটি পরিবাহীর রেজিষ্ট্যান্স উহার প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের উল্টানুপাতিক , যদি দৈর্ঘ্য স্থির থাকে । অর্থাৎ, R α 1/A
3) পরিবাহীর রেজিষ্ট্যান্স উহার উপাদানের উপর নির্ভরশীল যদি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদ স্থির থাকে ।
অর্থাৎ, R α L/A (প্রথম দুটি একত্রে)
অথবা R = ρL/A (যেখানে ρ একটি ধ্রুবক, ইহা পদার্থের আপেক্ষিক রেজিষ্ট্যান্স বা রেজিষ্টিভিটি )
.
১০. ওহমের সুত্র বিবৃত কর ।
উত্তরঃ স্থির তাপমাত্রায় কোন বর্তনীর মধ্যে দিয়া যে কারেন্ট প্রবাহিত হয় তাহা ঐ বর্তনীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সহিত সরাসরি সমানুপাতিক এবং রেজিষ্ট্যান্সের উল্টানুপাতিক । অর্থাৎ, I α V
বা, I α 1/R
বা, I = V/R (যেখানে R পদার্থের রেজিষ্ট্যান্স)
.
১১. AC বা অল্টারনেটিং কারেন্ট কি?
উত্তরঃ যে কারেন্টের দিক সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় তাকে অল্টারনেটিং কারেন্ট (AC) বলে।
.
১২. ইম্পিড্যান্স এবং রিয়েকট্যান্স কি?
উত্তরঃ ভোল্টেজ প্রয়োগের ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে সার্কিটে যে বিপরীত ক্রিয়া বা বাধা কাজ করে সেটাই হল ইলেক্ট্রিক্যাল ইম্পিড্যান্স।
গানিতিকভাবে অল্টারনেটিং সার্কিটে (AC circuit) ভোল্টেজ আর কারেন্টের কমপ্লেক্স রেশিও দিয়ে এটিকে প্রকাশ করা হয়, যার মান এবং ফেইজ এঙ্গেল (Phase angle) থাকে।
Z=R+jX
এখানে, Z হচ্ছে ইম্পিড্যান্স যার বাস্তব অংশ হচ্ছে রেজিস্ট্যান্স (R) এবং কাল্পনিক অংশ হচ্ছে রিয়েকট্যান্স (X).
ইম্পিড্যান্সকে আমরা অল্টারনেটিং সার্কিটের রেজিস্ট্যান্স বলতে পারি। ইম্পিড্যান্সকে ওহমে হিসাব করা হয়। অর্থাৎএর একক Ohm.
উল্লেখ্য যে, DC তে ইম্পিড্যান্স বলতে শুধু রেজিস্ট্যান্স,কারন DC তে রিয়েকট্যান্স (X) শূন্য।
.
১৩. অল্টারনেটিং সার্কিটে ইলেক্ট্রিক্যাল ইম্পিড্যান্স এর আরও কয় ধরনের মেকানিজম পাওয়া যায়?
উত্তরঃ দুই ধরণের। যথাঃ-
i. ক্যাপাসিট্যান্স
ii. ইন্ডাকট্যান্স
এই দুই মেকানিজম এর ফলে সার্কিটে যে ইম্পিড্যান্স পাওয়া যায় তাকে রিয়েকট্যান্স (Reactance) বলে। ক্যাপাসিটিভ রিয়েকট্যান্স (Xc) ও ইনডাকটিভ রিয়েকট্যান্স (XL) এবং এদের এককও Ohm.
.
১৪. ইলেকট্রিক্যাল মেশিনগুলো কি কি?
উত্তরঃ জেনারেটর (AC/DC) ; ট্রান্সফরমার ; মোটর(AC/DC)
.
১৫. জেনারেটর কাকে বলে?
উত্তরঃ জেনারেটর এমন একটি যন্ত্র বা মেশিন যার সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রুপান্তরিত করা হয়। আর এই রুপান্তর প্রক্রিয়ায় প্রয়োজন একটি চুম্বক ক্ষেত্র(Magnetic field), একটি আরমেচার (যাহার উপরিভাগে তারের কয়েল বসানো থাকে) এবং আরমেচারটিকে চুম্বকক্ষেত্রের ভিতর ঘুরানোর জন্য একটি ইঞ্জিন বা প্রাইমমুভার । আরমেচার কয়েলকে চুম্বকক্ষেত্রের ভিতর ঘুরালে আরমেচার পরিবাহীতে ভোল্টেজ উৎপন্ন হবে, যাকে ই এম এফ (electromotive force) বলে ।অল্টারনেটর বলতে এসি জেনারেটর কে বুঝানো হয়। ডিসি জেনারেটরে কমুটেটর থাকে, যার সাহায্যে আউটপুটে এসি কে ডিসি করা হয় ।
.
১৬. ট্রান্সফরমার কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ইলেকট্রিকাল যন্ত্র বা মেশিনের মাধ্যমে উহার পাওয়ার ও ফ্রিকুয়েন্সি অপরিবর্তিত রেখে এক সার্কিট থেকে আরেক সার্কিটে কোন প্রকার ইলেকট্রিকাল সংযোগ ছাড়াই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন নীতিতে বৈদ্যুতিক শক্তিকে স্থানান্তর করা যায় তাকে ট্রান্সফরমার বলে। ইহা একটি স্থির ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস । ট্রান্সফরমারে দুটি বর্তনী বা সার্কিট বা সাইড থাকে, একটি প্রাইমারি (সাপ্লাইয়ের সহিত সংযোগ থাকে) আর অন্যটি সেকেন্ডারি (যেখান থেকে লোডে সরবরাহ করা হয়) এবং কয়েল দুটি সাধারণত এনামেল ইন্সুলেশন যুক্ত তামার তারের হয়ে থাকে ।
.
১৭. মোটর কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে ইলেকট্রিক্যাল মেশিন সরবরাহ থেকে ইলেকট্রিক্যাল শক্তি গ্রহন করে যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তর করে তাকে মোটর বলে । ইহা AC ও DC এর হয়ে থাকে ।
.
১৮. প্রাইমারি ট্রান্সমিশন কি?
উত্তরঃ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রেরণ প্রান্ত থেকে রিসিভিং প্রান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ অতি উচ্চ ভোল্টেজ লাইনকে প্রাইমারি ট্রান্সমিশন (লাইন) বলা হয়। প্রাইমারি ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ 110KV, 132KV, 230KV, 400KV পর্যন্ত হতে পারে।
.
১৯. সেকেন্ডারি ট্রান্সমিশন কি?
উত্তরঃ রিসিভিং স্টেশন থেকে সাব-স্টেশন পর্যন্ত দীর্ঘ উচ্চভোল্টেজ লাইনকে সেকেন্ডারি ট্রান্সমিশন (লাইন) বলা হয়। সেকেন্ডারি ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ 33KV, 66KV হতে পারে।
.
২০. সেকেন্ডারি ডিস্ট্রিবিউশন কি?
উত্তরঃ যে পদ্ধতিতে 11 KV প্রাইমারি ডিস্ট্রিবিউশন লাইন হতে শহর বা লোকালয়ে বা কারখানা এলাকায় অবস্থিত ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমারে ভোল্টেজ কমিয়ে 400 V অথবা 230 V সিস্টেমে বিভিন্ন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ব্যাবস্থা করা হয় তাকে সেকেন্ডারি ডিস্ট্রিবিউশন বলা হয়।
.
২১. বাংলাদেশে প্রাইমারি ডিস্ট্রিবিউশন ভোল্টেজ কত?
উত্তরঃ 11KV, 6.6KV, 3.3KV ইত্যাদি।
.
২২. বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ কত?
উত্তরঃ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ 230KV
.
২৩. ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন এর জন্য সর্বাপেক্ষা ভালপদ্ধতি কি ?
উত্তরঃ সর্বাপেক্ষা ভাল পদ্ধতি হল উৎপাদন ও বিতরণের জন্য AC ব্যবস্থা এবং ট্রান্সমিশন এর জন্য DC ব্যবস্থা।
.
২৪. ফিডার কি?
উত্তরঃ জনবহুল এলাকা, কারখানা বা আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লক্ষে উচ্চ ভোল্টেজ উপকেন্দ্র বা গ্রিড উপকেন্দ্র হতে বিভিন্ন লোড সেন্টারে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদানের জন্য যে untapped লাইন নির্মাণ করা হয়, তাকে ফিডার বলে।
...
..
সংগ্রহে:
তাইফুর রহমান জাবেদ।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন